১৯৯৬ সাল!
আমি তখন মাদ্রাজে (চেন্নাই) থাকি! মাদ্রাজ ইউনিভার্সিটিতে বিবিএ করছি!
একদিন মাদ্রাজ সিটিতে ঘুরতে গিয়ে হঠাত করে শুনি হেলিকপ্টারের আওয়াজ হচ্ছে! আমি মাথার উপরে চারপাশে তাকায়ে কোথাও হেলিকপ্টার খুঁজে পেলাম না!
কিন্তু পর মুহুর্তে দেখলাম সেটা রাস্তায়! একটা বাইক যাচ্ছে যার আওয়াজ অনেকটা হেলিকপ্টারের মত! সিনিয়র ভাইদের কাছে জানলাম এটার নাম রয়্যাল এনফিল্ড বুলেট!!
বাংলাদেশ এখন রয়্যাল এনফিল্ড জ্বরে ভুগতেছে! তবে সেগুলা ভারত থেকে আমদানি করা না! বাংলাদেশেই সংযোজিত! আর এ কারনেই তুলনামূলকভাবে দাম কম!!
তবে বাইকটা আমাদের দেশের সবার জন্য আসলে উপযুক্ত বাইক না! এটা একটা সাদা হস্তির মত! মেইন্টেনেন্স খরচ অনেক, যা অনেকের পক্ষে বহন করা কষ্ট হয়ে যাবে!!
রয়্যাল এনফিল্ডের মেটিওর ইঞ্জিন ১ সিলিন্ডার বিশিষ্ট ৪ স্ট্রোক বাইক! এটায় ইঞ্জিন অয়েল লাগে প্রায় আড়াই লিটার! অর্থাৎ, একবার ইঞ্জিন ওয়েল পাল্টাতেই প্রায় ২ হাজার টাকা নাই হয়ে যাবে!!
বাংলাদেশের রাস্তায় মেটিওর ইঞ্জিন ২৫/৩০ এর বেশি মাইলেজ দিবে বলে মনে হয় না! তাই এটার খাবার খরচ প্রচুর হয়ে যাবে!!
মূলত রয়্যাল এনফিল্ড আসলে সবার জন্য না!
রয়্যাল এনফিল্ড আসলে আমাদের জন্য ভ্যালু ফর মানি ব্র্যান্ড না, এনফিল্ড একটা হাই মেইন্টেনেন্স বাইক! এটা সৌখিন ও পিওর রাইডারদের জন্য, যারা রাইড করে এক্সপ্লোরেশন এর জন্য!!
আজ থেকে ২৭ বছর আগে আমি মাদ্রাজে বুলেট চালিয়েছি! তবে খুব অল্প কয়েকবার! মনে হয়েছে আমি যেনো বাতাসে উড়ছি! বাইকটার একটা গাম্ভির্য আর আভিজাত্য আছে! তবে আমার জন্য আমার কাওয়াসাকি বাজাজই ভালো ছিলো!!
তাই হুট করেই নিজের জিক্সার বা পালসার বিক্রি করে এনফিল্ড কিনে ফেইলেন না! নিজের অবস্থা বুঝেন, তারপর বুঝে শুনে সিদ্ধান্ত নেন!
রয়্যাল এনফিল্ড বাংলাদেশেই প্রডিউস (এসেম্বেলড) হচ্ছে, তাই দ্রুত ফুরিয়ে যাবে না!!
নিজের আভিজাত্য বজায় রাখতে গিয়ে ফকির না হওয়াই উত্তম!!
সাইফুল আজম
২২ অক্টোবর, ২০২৪