যুবদল নেতার উপর হামলার ঘটনায় বিএনপির সভাপতিসহ ১৬ জনকে আসামী করে মামলা!
সিরাজদিখান প্রতিনিধিঃ
মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে পূর্ব শত্রুতার জেরে জেলা যুবদলের সাবেক সদস্য মোঃ কাউসার হোসেন নামে যুবদল নেতার উপর হামলার ঘটনায় সিরাজদিখান থানায় মামলা করা হয়েছে। হামলার শিকার যুবদল নেতা মোঃ কাউসারের খালাতো ভাই মোঃ নেছার সিরাজদিখান থানায় কেয়াইন ইউনিয়নের কুচিয়ামোড়া গ্রামের শামসুদ্দিন খানের ছেলে কেয়াইন ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি নাছিম খান ও তার ভাই সায়েম খান,নাসিম খানের দুই ছেলে সম্রাট খান ও ইমরান খান, মুক্তার খানের ছেলে শহিদুল, মৃত আব্দুল হোসেনের দুই ছেলে আরিফ খান রিগান ও মারুফ, মৃত শাফিল খানের ছেলে রিফাত খান,মৃত দুর্লভ খানের ছেলে আলিনুর লাকি,মাসুম খানের ছেলে আনিছ খান, সাধুর ছেলে মানিক, বড়বর্তা গ্রামের আব্দুর রশিদের ছেলে সেন্টু, চালতিপাড়া গ্রামের হারুনের ছেলে রেদোয়ান,কুচিয়ামোড়া গ্রামের মোক্তার খানের ছেলে কহিনুর খান,চালতিপাড়া গ্রামের ইউসুফের ছেলে রিফাত ও মতির ছেলে মোকসুদদের এজহার নামীয় আসামীসহ আরো ৪/৫ জনকে অজ্ঞাতানামা আসামী করে মামলাটি দায়ের করেন। যার নং-২০।
মামলার এজাহারে বলা হয়, যুবদল নেতা কাউসার হোসেন গত শনিবার সন্ধ্যা অনুমান ৭ টার দিকে উপজেলার কেয়াইন ইউনিয়নের নিমতলা আন্ডার পাসের পশ্চিম পাশে পাকা রাস্তার উপর পৌঁছলে পূর্ব শত্রুতার জেরে কেয়াইন ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি নাসিম খানের হুকুমে তার ভাই সায়েম খানের হাতে থাকা ধারালো চাপাতি দিয়ে কাউসার হোসেনের মাথায় কোপ দিয়ে গুরুতর কাটা রক্তাক্ত জখম করে। এতে কাউসার হোসেন মাটিতে পরে গেলে সম্রাট খান, আরিফ খান রিগ্যান ও রিফাত খানের হাতে থাকা চাপাতি দিয়ে কাউসার হোসেনের মাথায় কোপ দিয়ে মাথার বিভিন্ন অংশে গুরুতর কাটা রক্তাক্ত করে। এছাড়া আনিস খানের হাতে থাকা লোহার রড দিয়ে কাউসার হোসেনের বাম হাতে আঘাত করে বাম হাতে হাড় ভাঙ্গা জখম করে এবং মানিকের হাতে থাকা ধারালো দা দিয়া কোপ দিয়ে কাউসার হোসেনের ডান হাতে গুরুতর কাটা রক্তাক্ত জখম করে। সেন্টুর হাতে থাকা চাপাতি দিয়ে কাউসার হোসেনের কপালে কোপ দিয়ে গুরুতর কাটা রক্তাক্ত জখম কর। পরে কাউসান হোসেনকে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয় মর্মে মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়।
এদিকে যুবদল নেতা কাউসার হোসেনের উপর হামলার ঘটনাকে পুঁজি করে নিরপরাধ মানুষ ও দলীয় নেতাকর্মীদের মামলায় জড়িয়ে একটি পক্ষ রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের চেষ্টা চালাচ্ছে মর্মে অভিযোগ উঠেছে । অন্যদিকে দায়েরকৃত মামলার ২নং আসামী সায়েম খান ও ৬ নং আসামী আরিফ খান রিগ্যানের যুবদল নেতার উপর হামলার ঘটনার সাথে কোন সম্পৃক্ততা নেই মর্মে দাবী করেন তারা। মামলার এজাহারে হামলার ঘটনাটি সংঘটিত হওয়ার যে সময় উল্লেখ করা হয়েছে সে সময় ২নং আসামী সায়েম খান কুচিয়ামোড়া কলেজ গেট সংলগ্ন তার ব্যক্তিগত অফিস কক্ষে অবস্থানরত ছিলেন এবং ৬ নং আসামী আরিফ খান রিগ্যান ঢাকায় অবস্থান করেছেন মর্মে দুইজন ভিন্ন সিসিটিভি ফুটেজ প্রমান হিসেবে প্রতিবেদকের কাছে উপস্থাপন করেন। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায় সন্ধ্যা ৬ টা ৫ মিনিট থেকে ৭ টা ৫ মিনিট পর্যন্ত অফিস কক্ষের চেয়ারে বসা অবস্থায় সায়েম খানকে অবস্থান করতে লক্ষ করা যায়। অপরদিকে ৬ নং আসামী আরিফ খান রিগ্যান ঢাকার ইত্তেফাক ভবনের ড্রিম গ্রীন সিটির ড্রিম হ্যাভেন হাউজিং লিমিটেডের ইসি মিটিংয়ে অংশ গ্রহণ করে সন্ধ্যা ৬ টা থেকে রাত ৯ টা পর্যন্ত অবস্থান করেন মর্মে সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়।
মামলার ২নং আসামী সায়েম খান ও ৬ নং আসামী আরিফ খান রিগ্যান পৃথক বক্তব্যে অভিযোগ করে বলেন, কাউসারের উপর হামলার ঘটনার সাথে আমাদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। কারণ যে সময় ঘটনা ঘটেছে সে সময় আমরা ভিন্ন ভিন্ন স্থানে কাজে ব্যস্ত ছিলাম। আমরা যে এ ঘটনায় জড়িত নই সেটির প্রমাণ সিসিটিভি ফুটেজ উপস্থাপন করেছি। একটি পক্ষ আমাদেরকে উদ্দেশ্যে প্রনোদিত ভাবে সামাজিক, আর্থিক ও রাজনৈতিক ভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার উদ্দেশ্যে আমাদের নাম মামলায় জড়িয়েছে। সুষ্ঠ তদন্তের মাধ্যমে যাতে আমাদের মামলার দায় থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয় সে জন্য পুলিশ প্রশাসনের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষ করছি।
মামলার বাদী মোঃ নেছার যুবদল নেতা কাউসার হোসেনের উপর হামলার ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার পূর্বক তাদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিরাজদিখান থানার এস আই মোঃ মতিউর বলেন, গত কালকে ১৬ জনকে আসামী করে মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। আসামী গ্রেফতারে চেষ্টা চলছে।
মোহাম্মদ রোমান হাওলাদার